খবরে বলা হয়, দুই দেশের পক্ষ থেকেই এ ব্যাপারে ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সৌদি আরব সফর করেন। এ সময় রিয়াদ ও তেহরানের মধ্যে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিতে তাকে অনুরোধ করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। যুবরাজ ইমরান খানকে বলেন, ‘আমি যুদ্ধ এড়াতে চাই।’ নিউ ইয়র্কে সাম্প্রতিক জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন পাকিস্তানি নেতা। রিয়াদের পক্ষ থেকে ইরাককেও অনুরোধ করা হয়েছে; তারাও যেন এ ব্যাপারে ইরানি নেতাদের সাথে কথা বলে। এ বছর ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের দুই তেল স্থাপনায় হামলার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে রিয়াদ। ওই হামলার পর সৌদি আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। এরপরই ইরানের সাথে আলোচনার ব্যাপারে মধ্যস্থতা করতে পাকিস্তান ও ইরাকের শরণাপন্ন হন এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
১৪ সেপ্টেম্বরের হামলার ঘটনায় ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা দায় স্বীকার করলেও শুরু থেকেই এ ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে আসছে সৌদি আরব। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারস্থ হয় রিয়াদ। কিন্তু দৃশ্যত রিয়াদের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই নড়েচড়ে বসেন সৌদি যুবরাজ। মিত্র আমেরিকার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে তেহরানের সাথে সমঝোতার পথে হাঁটতে এক রকম বাধ্য হন তিনি। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করায় সৌদি আরবের নিরাপত্তা নিয়ে আমেরিকার অঙ্গীকারের বিষয়ে সৌদিদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নিজেদের নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি রিয়াদের আত্মবিশ্বাস ছিল উপসাগরীয় অঞ্চলে বিগত কয়েক দশকের কৌশলগত বিন্যাসের ভিত্তিস্বরূপ। কিন্তু বড় ধরনের হামলার শিকার হয়েও ইরানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে না পেরে দৃশ্যত হতাশ সৌদি আরব। নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্র ওয়াশিংটনই তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।
ট্রাম্পের বিষয়ে মুসলিম বিশ্বের উদ্বেগ সত্ত্বেও বরাবরই তার প্রতি আগ্রহ ছিল রিয়াদের। ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পের মুসলিমবিরোধী নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে সমালোচনার মধ্যেই ট্রাম্পকে ‘মুসলমানদের সত্যিকারের বন্ধু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন সৌদি আরবের বর্তমান যুবরাজ এমবিএস। ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সাথে বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বের সাথে কাজ করার বিষয়ে ট্রাম্পের অভূতপূর্ব আগ্রহ রয়েছে। তিনি মুসলমানদের সত্যিকারের বন্ধু। তার অভিবাসন নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু ইসলাম- এমনটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরং একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দিতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’ ট্রাম্পের কথিত শান্তি পরিকল্পনা মেনে নিতে সৌদি যুবরাজ ফিলিস্তিনের প্রতিও তীব্র চাপ সৃষ্টি করেছিলেন বলে খবর এসেছিল। কিন্তু এখন আক্রান্ত হওয়ার পরও ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনকে কাছে না পেয়ে রিয়াদকে সঙ্কটের নিজস্ব সমাধান খুঁজতে হচ্ছে।
রিয়াদের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্ক টাইমসের কাছে ইরানের সাথে মধ্যস্থতার ব্যাপারে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে পাকিস্তান ও ইসলামাবাদের শরণাপন্ন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে সরাসরি যুবরাজ এমবিএস এ অনুরোধ করেছেন বলে যে খবর বেরিয়েছে তা অস্বীকার করেছে রিয়াদ।
Sunday, October 6, 2019
Like Us on Facebook
Subscribe us on YouTube
Categories
- আন্তর্জাতিক (1)
Popular Posts
-
করোনার ওষুধ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে ভারতের বিখ্যাত যোগগুরু ও পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের প্রধান বাবা রামদেবসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা ...
-
গ্রেফতার হওয়া রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাব। সেখানে উপস্থিত থাকা কর্মকর্তাদের সাথে কথা ...
0 comments:
Post a Comment